বাংলা সাহিত্যে ‘ভোরের পাখি’ বিহারীলাল চক্রবর্তী। তিনিই প্রথম বাংলায় ব্যক্তির আত্মলীনতা, ব্যক্তিগত অনুভূতি ও গীতোচ্ছ্বাস সহযোগে কবিতা রচনা করে বাংলা কবিতাকে ভিন্নমাত্রা দান করেন। এজন্য তাকে বাংলা সাহিত্যের ‘ভোরের পাখি’ বলা হয়।
“ভোরের পাখি” – বিহারীলাল চক্রবর্তী
“ভোরের পাখি” উপাধি পেলেন বাংলা সাহিত্যের প্রথম গীতিকবি বিহারীলাল চক্রবর্তীর ভূষণ হিসেবে—রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরেই এই নামকরণ করেছেন। ঠাকুর লিখেছেন, সেই প্রথম যে “কবিনিজের সুর” বাংলা কবিতায় উচ্চারিত হয়েছিল, সেটি বিহারীলালের নিজের গান ছিল (shikkhasova.wordpress.com)।
📘 জীবনী সংক্ষিপ্ত:
- জন্ম ও প্রেক্ষাপট
২১ মে ১৮৩৫‑এ কলকাতা‑র জোড়াবাগানে মধ্যবিত্ত ব্রাহ্মণ পরিবারে জন্মগ্রহণ করেন (bn.wikipedia.org)। - শিক্ষা
সুচনার ছোটবেলা থেকেই সংস্কৃত, বাংলা ও ইংরেজিতে পারদর্শী হন। পরবর্তীতে তিনি কলকাতার সংস্কৃত কলেজে অধ্যয়ন করেন (bn.wikipedia.org)।
✍️ সাহিত্য ও অবদান:
- বাংলার প্রথম গীতি-কবি
সংস্কৃত ও ইংরেজি সাহিত্যের প্রভাব নিয়েও বিহারীলাল তার গীতিকবিতায় বাংলা মননের গহীনে ঢুকে যাওয়া গভীর “অনুভূতি ও আবেগ” তুলে ধরেন (bn.wikipedia.org)। - **প্রধান রচনাবলি**
— স্বপ্নদর্শন (১৮৫৮)
— সঙ্গীতশতক (১৮৬২)
— বঙ্গসুন্দরী (১৮৭০)
— নিসর্গসন্দর্শন (১৮৭০), বন্ধুবিয়োগ (১৮৭০), প্রেম প্রবাহিনী (১৮৭১)
— সারদামঙ্গল (১৮৭৯) — রবীন্দ্রনাথের ভাষ্যে “সুরের বলয়”,
— সাধের আসন (১৮৮৯), ধূমকেতু (১৮৯৯) ইত্যাদি (bn.wikipedia.org)। - সম্পাদকীয় ভূমিকা
তিনি নিজেও পত্রিকা সম্পাদনা করেন — ‘পূর্ণিমা’, ‘সাহিত্য‑সংক্রান্তি’, ‘অবোধবন্ধু’ ইত্যাদি (bn.wikipedia.org)।
🌅 “ভোরের পাখি” কেন?
- রবীন্দ্রনাথ তার “মনোবীণার নিভৃত ঝংকারে” সৃষ্টি সুরকে উল্লেখ করে “উষালগ্নের শুকতারা” বা ভোরের পাখি হিসেবে অভিহিত করেছেন।ান্তরঙ্গ গীতিমূলক আবেগ যার কবিতায় প্রথম প্রকাশ পেয়েছিল, তাঁরই সুর ছিল তা (shikkhasova.wordpress.com)।
- তিনি প্রচলিত মহাকাব্যের উন্মাদনা ছেড়ে, সরল, হৃদ্য “ছন্দে মনের কথা” বলেছিলেন – যা অসীমভাবে পাঠকের হৃদয়ে ঢুকেছিল (sunamganjerkhobor.com)।
🕯️ শেষ কথা
১৮৯৪ সালের ২৪ মে মৃত্যুর পরেও বিহারীলালের এ গীতিকবিতার রেখা বাংলা সাহিত্যে অনিবার্য হয়ে থেকে যায়। রবীন্দ্রনাথের “ভোরের পাখি” উপাধি শুধু শ্রদ্ধার নয়, বাংলা গীতিকবিতার প্রথম প্রভাতেই যে নতুন গান ফিরে এসেছে তার স্বীকৃতিও।